ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক ভয়াবহ সংঘাতের পর চীনে সফররত পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারকে ‘লোহিত ভাই’ বলে সম্বোধন করেছে বেইজিং। এ সময় চীন ইসলামাবাদের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও আত্মরক্ষার অধিকারে অকুণ্ঠ সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছে।
চারদিন ধরে চলা ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর, ১০ মে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২০ মে) পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বেইজিংয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে ইসহাক দারের বৈঠকে দুই দেশের ঐতিহ্যবাহী সৌহার্দ্য ও উষ্ণ সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আলোচনায় দক্ষিণ এশিয়ার উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা উঠে আসে।
ইসহাক দার জানান, যুদ্ধবিরতির পর প্রথম বিদেশ সফরের জন্য চীনকে বেছে নেওয়া ছিল পাকিস্তানের পক্ষ থেকে একটি কৌশলগত বার্তা, যাতে চীনের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। তিনি বলেন, “চীনের মৌলিক স্বার্থে পাকিস্তান অতীতেও পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে।”
দার আরও বলেন, দুই দেশের নেতৃত্ব যে ‘অল ওয়েদার স্ট্র্যাটেজিক কো-অপারেটিভ পার্টনারশিপ’-এ সম্পর্ক উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, পাকিস্তান তা বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি কাশ্মীর সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। তার মতে, সেটিই দক্ষিণ এশিয়ায় স্থায়ী শান্তির পথ।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, পাকিস্তান চীনের অকৃত্রিম বন্ধু ও সর্বকালীন কৌশলগত অংশীদার। তিনি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও উচ্চতায় নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেন এবং পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের স্পষ্ট অবস্থানের প্রশংসা করেন।
দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও শিল্পায়ন খাতে সহযোগিতা জোরদারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তারা চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি)-এর দ্বিতীয় পর্যায়ে অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তৃতীয় পক্ষের অংশগ্রহণের সম্ভাবনাও উন্মুক্ত রাখার কথা বলেন।
আঞ্চলিক শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে দুই পক্ষ নিয়মিত যোগাযোগ ও সমন্বয় অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়, যাতে বহুপাক্ষিক মঞ্চেও অভিন্ন লক্ষ্য পূরণে একযোগে কাজ করা যায়।